Subscribe Us

header ads

অনলাইন ইনকাম (Online Income) : অনলাইন আয় এর সেরা ১০টি উপায় (২)

অনলাইন ইনকাম



৪। অনলাইন টিচার (Online Teacher)

আমাদের আসে পাশে অনেক মানুষই দেখতে পাবেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা কোনো কোচিং সেন্টার খুলে সেখানে পড়াচ্ছেন। এভাবে পড়িয়ে মাসে অনেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। কিন্তু এভাবে বাসায় গিয়ে গিয়ে পড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় এবং অর্থ যাতায়াতেই চলে যায়।

অন্যদিকে কোচিং সেন্টারের জায়গা জোগাড় করাও একটি কষ্টসাধ্য বিষয়। এক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশে যে বিষয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সেটি হলো অনলাইন টিচার (Online Teacher) কনসেপ্ট।

আপনি চাইলেই ঘরে বসেই অনলাইনে ছাত্রদের পড়িয়ে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করে নিতে পারেন। আপনি জেনে অবাক হতে পারেন যে বর্তমান বিশ্বে ৫০ শতাংশ শিক্ষক অনলাইনে শিক্ষা দিচ্ছেন।ভারতেও এর জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক বেশি। বর্তমানে আমাদের দেশেও এরকম বেশ কয়েকটি প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে অনলাইনে পড়ানো হয়ে। এর মধ্যে টেন মিনিট স্কুল অন্যতম।

৫। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) করে আয়

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) বর্তমানে সারা বিশ্বেই অনেক জনপ্রিয় একটি অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশেও আস্তে আস্তে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর সংখ্যা বাড়ছে । এটি অনেক সহজ একটি মাধ্যম। কিন্তু সাধারন মানুষের অনেকেরই এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারনা না থাকার কারনে এই কাজে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করছেনা। আসুন বিষয়টা খুব সহজে বুঝে নিই।

বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ই-কমার্স (E-Commerce) সাইট রয়েছে। এদের ভেতরে অনেকগুলো আবার সারা বিশ্বেই পন্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে। এইসব ই-কমার্স (E-Commerce) সাইটে প্রত্যেকটাতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) নামে একটি সেকশন রয়েছে।

আপনি সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে খুব সহজেই তাদের মেম্বার হয়ে যেতে পারেন। তারপর আপনার একটা গ্রুপ তৈরি করতে হবে বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে। এরকম গ্রুপ আমাদের প্রতিটি মানুষেরই আছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে।

এখন ওই নির্দিষ্ট ই-কমার্স (E-Commerce) সাইট থেকে আপনি বিভিন্ন পন্যের বিবরন সহ ওই লিঙ্ক কপি করে বিভিন্ন গ্রুপে পাঠাতে হবে। এবার ওখানে থেকে ওই লিঙ্কে ক্লিক করে যদি কেও পন্যটি কিনে তাহলে আপনি সেটার থেকে নির্দিষ্ট পরিমানের একটি কমিশন পাবেন। এক্ষেত্রে আপনার কমিশনের জন্য কিন্তু পন্যটির দাম বাড়বে না। পন্যটির আসল যে দাম সেটি দিয়ে মানুষ কিনতে পারবে আপনার পাঠানো লিঙ্ক থেকে। তবে এ ধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং সর্ম্পকেও পরিষ্কার ও সুস্পষ্ট ধারনা থাকা চাই।

এভাবে অনেক টাকায় ইনকাম করা সম্ভব হয় যদি আপনি ভালো একটি কমিউনিটি তৈরি করে ফেলতে পারেন। তাছাড়া আপনি চাইলে এখান থেকে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমেও ইনকাম করতে পারেন। বর্তমানে অ্যামাজন এফিলিয়েশন প্রোগ্রাম (Amazon Affiliation Program) বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

৬। ড্রপশিপিং (Dropshipping) এর মাধ্যমে আয়

ড্রপশিপিং (Dropshipping) অনলাইন ব্যবসার অন্তর্গত একটি কাজ যার মাধ্যমে খুব সহজেই অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব। চলুন প্রথমেই জেনে নেই ড্রপশিপিং (Dropshipping) আসলে কি। এটা উদাহরন দিয়ে বুঝালে আপনি খুব সহজেই বুঝে যাবেন।

মনে করেন, আপনার এলাকায় পরিচিত একজন কোনো একটা পন্য তৈরি করে সেটা বাজারে ৫০০ টাকায় বিক্রি করে। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখলেন যে এই পন্যটিই শহরে বড় বড় মার্কেটে অথবা কোনো ই-কমার্স সাইটে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তো এক্ষেত্রে আপনি নিজেই বড় একটি ই-কমার্স (E-Commerce) সাইটে প্রোফাইল খুলে ওই পন্যটি বিক্রি করতে পারেন। আপনি আপনার এলাকার যে উৎপাদনকারী আছে তার কাছে থেকে পন্য টা ৫০০ টাকায় কিনে সেটি আপনার প্রোফাইলে কম টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।

৭। ওয়েবসাইট (Website) বানিয়ে আয়

আমরা সবাই জানি, একটি ভালো ওয়েবসাইটের দাম লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। আপনিও চাইলে এরকম ওয়েবসাইট বানাতে পারেন এবং সেটি সচল করে অনেক বেশি দামে বিক্রি করে দিতে পারেন। ওয়েবসাইট বানানো বর্তমানে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার মতোই সহজ। যে কেউ চাইলেই বানাতে পারেন। কিন্তু যে সাইট গুলো খুব সহজে বানানো যায়, সেগুলোর তেমন কোনো চাহিদা থাকে না। তবে আপনার সাইটে যদি পরিমিত পরিমান ট্রাফিক থাকে, সেক্ষেত্রে দাম পেতে পারেন ভালো। যে সাইট গুলো বেশি দামে বিক্রি হয় সেগুলো দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার দ্বারা তৈরি করা হয়।

তাই আপনি যদি একজন ওয়েব ডিজাইনার হয়ে থাকেন, অথবা ওয়েব ডিজাইনিং শিখতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনি নিজে নিজে ভালো ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে পর্যাপ্ত কন্টেন্ট আপলোড করে সেখান সাইটটি সচল করে সেটিকে ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন। আপনি চাইলে ইউটিউব থেকে ফ্রিতে ভিডিও দেখে বা ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ওয়েব ডিজাইন কোর্স করেও শিখতে পারেন ওয়েব ডিজাইনিং।

৮। ভিডিও দেখে অনলাইন ইনকাম

ভিডিও দেখে অনলাইন ইনকাম করার বিষয়টি অনেকেই জানে না। সত্যি কথা বলতে অনলাইন থেকে ভিডিও দেখে ইনকাম করা যায় এবং এটি সত্যি। বর্তমানে এমন কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনাকে প্রতিদিন ভিডিও দেখার জন্য পেমেন্ট করবে। তবে মনে রাখবেন, অনলাইনে ভিডিও দেখে ইনকাম করার মতো স্ক্যাম বা ভূয়া সাইট রয়েছে। যারা আপনাকে দিয়ে ভিডিও দেখিয়ে পরবর্তীতে কোনো পেমেন্ট করবে না। এ ধরনের প্রতারণার হাত থেকে বাচঁতে অবশ্যই আপনাকে অনলাইন জগতে সব সময় সর্তক থাকতে হবে।

৯। ছবি বিক্রি (Sell Photos Online) করে আয়

আমাদের বর্তমান জেনারেশনে স্মার্টফোন নেই এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গণা। অনেকের কাছে আবার বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরাও বিদ্যমান। আপনি চাইলে আপনার এই মোবাইলের মাধ্যমে খুব সহজেই অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে শুধু বিভিন্ন আকর্ষণীয় জিনিসের ছবি তুলতে হবে। সেটা আপনি আপনা মোবাইল ফোন দিয়েও তুলতে পারেন আবার ক্যামেরা দিয়েও তুলতে পারেন।

তারপর চাইলে একটু এডিট করে অথবা “র” (Raw) ফাইলই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপলোড করে সেখান থেকে এক একটি ছবির জন্য ৫০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। আপনি যদি অল্প সল্প ফটো এডিটিং জানেন, তাহলে এক্ষেত্রে অনেক সুবিধা লাভ করতে পারবেন। Photoshop, Illustrator ইত্যাদির মাধ্যমে ছবির আকর্ষণীয়তা অনেক ক্ষেত্রেই জানা বাড়ানো যায়।

অনলাইনে ছবি বিক্রির জন্য অনেক ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন আপনি। তার মধ্যে, Shutterstock, 500px, Envato ইত্যাদি খুবই জনপ্রিয় এবং সব থেকে বেশি পে করে থাকে ফটোগ্রাফারদেরকে। আপনি এইসব ওয়েবসাইট গুলো তে যে ছবি গুলো বিক্রি করবেন সেগুলো আবার ওই ওয়েবসাইট থেকেই বিভিন্ন মানুষ ক্রয় করে নিবে। এইসব ছবি গ্রাফিক ডিজাইনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। বিভিন্ন বইয়ের কাভারে, ব্যানারে, ফেস্টুনে এইসব ছবি বিক্রি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

১০। অনলাইন রিসেলিং (Online Reselling) করে আয়

অনলাইনে পন্য বিক্রি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে বেশ বড় বড় কয়েকটি অনলাইন ব্যবসা রয়েছে। আপনি চাইলে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে বড় পর্যায়ে শুরু করতে হবে। আর এতে আপনার পুরো সময়টাই ব্যয় করতে হবে এবং সাথে সাথে আরও অনেক দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেটা ছাত্রজীবনে করা একটি কষ্টকর হয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইন রিসেলিং (Online Reselling) করে বেশ ভালো ইনকাম করতে পারেন। অনলাইন রিসেলিং মুলত অনলাইনে পন্য বিক্রির কাজ কিন্তু এক্ষেত্রে আপনাকে বেশি কিছু করা লাগবেনা। আপনি শুধু একটি রিসেলিং কোম্পানি (Reselling Company) তে আপনার একাউন্ট খুলবেন এবং এখান থেকে পন্যের ছবি এবং বিবরন নিয়ে আপনি নিজে একটা পেজ খুলে বিক্রি করবেন।

রিসেলিং কোম্পানির কাছে অনেক কম দামে পন্য পাবেন আর ওইগুলা তার থেকে সামান্য বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করে আপনি নিজের লাভ বের করবেন। বেশি কিছু রিসেলিং কোম্পানি (Reselling Company) বাংলাদেশে রয়েছে। এর মধ্যে শপআপ (ShopUp) অন্যতম। এখানে আপনাকে পন্য বিক্রয় করার জন্য নিজের কোনো পন্য লাগবে না। পন্য যোগাড় থেকে শুরু করে বাকি সব কাজই ওই রিসেলার কোম্পানি করে দিবে।

১১। অনলাইন সার্ভে (Online Survey) করে আয়

অনেক কোম্পানি আছে যারা গ্রাহকের কাছ থেকে ফিডব্যাক পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের সার্ভে করে থাকে। অনেক দেশে তো সরকারীভাবেই বিভিন্ন সার্ভে হয়ে থাকে। দেশের সার্বিক অবস্থায় দেশের জনগন কতটা সন্তুষ্ট এটা জানার জন্য সরকার এই সার্ভে গুলো করে থাকে। তবে বড় বড় কোম্পানিগুলোই বেশির ভাগ অনলাইন সার্ভের ব্যবস্থা করে থাকে।

এর জন্য আপনাকে প্রথমে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলতে হবে। তারপর আপনার সব ইনফর্মেশন দিয়ে অ্যাকাউন্ট আপডেট করে নিলেই আপনি কয়াজ শুরু করার জন্য প্রস্তুত। তবে প্রতিটি সার্ভেতেই আপনি কুয়ালিফাই হতে পারবেন না। শুধু মাত্র যে সার্ভে গুলো আপনার অ্যাকাউন্ট-এ দেওয়া তথ্যের সাথে মিলবে সেগুলোই আপনি করতে পারবেন।

অনলাইন ইনকাম ও বিকাশে পেমেন্ট

একটা বিষয় সর্ম্পকে আপনাদের পরিষ্কার ধারনা থাকা উচিত। অনলাইন ইনকাম করে বিকাশে টাকা আনার ব্যাপারে আপনাদের অনেকেরই মনে একটি প্রশ্ন আসে যে অনলাইনে আয়কৃত টাকা কি সরাসরি বিকাশে আনার কোনো উপায় আছে?

একদম সহজ করে যদি এক কথায় এটির উত্তর দিতে চাই তাহলে এটির উত্তর হবে ’না ‘। আপনি অনলাইনে আয় করা টাকা সরাসরি আপনাকে বিকাশে আনতে পারবেন না।

এমন অনেক অনলাইন ইনকাম সাইট (Online Income Site) রয়েছে যেখানে তারা সরাসরি বিকাশে ক্যাশ উইথড্র করার সুযোগ দিয়ে থাকে। সে ধরনের কোনো ওয়েবসাইটে যদি আপনি কাজ করে থাকেন এবং সাইটটি যদি রিয়েল হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি বিকাশে পেমেন্ট নিতে পারবেন।

এছাড়াও আপনি যদি কোনো বাহিরের দেশের কোনো ওয়েবসাইটে কাজ করে থাকেন যারা মূলত বিকাশে পেমেন্ট করে না বরং অন্য কোনো পেমেন্ট গেটওয়েতে (Payment Gateway) পেমেন্ট করে তাকে সেক্ষেত্রে আপনি কোনো থার্ড পার্টি ব্যবহার করে পেমেন্টটি রিসিভ (Receive) করতে পারেন।

অনলাইন ইনকাম মোবাইল দিয়ে

বিকাশের মতো অনেকেরই মনে একটি প্রশ্ন থাকে যে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করা যায় কি না। সত্যি কথা বলতে বিকাশের মতোই একদম সহজ করে এক কথায় যদি উত্তর দিতে হয় তাহলে বলবো ‘না’। আপনি মোবাইল দিয়ে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন না।

আমি বলছি না যে মোবাইল দিয়ে অনলাইন থেকে একদমই আয় করা যাবে না। অনেক বড় বড় ইউটিউবার রয়েছেন যারা শুধুমাত্র মোবাইল দিয়ে ভিডিও করেই আজকে অনেক লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবার ও ভিউস পেয়েছেন। এমনও অনেকে রয়েছেন যারা শুধুমাত্র একটি মোবাইল দিয়েই ফেসবুক একটি পেজ পরিচালনার মাধ্যমে তাদের অনলাইন ব্যবসা দিনকে দিন বড় করেই তুলছেন।

কিন্তু সত্যি কথা বলতে আপনি যদি সত্যিকার অর্থেই অনলাইন থেকে ভালো আয় করতে চান তাহলে কিন্তু আপনার অবশ্যই একটি ভালো মানের কম্পিউটারের প্রয়োজন পড়বে। নতুবা আপনার পক্ষে প্রফেশনালভাবে অনলাইনে কাজ করাটা অনেকটাই কষ্টকর হয়ে যাবে।

শেষ কথা

অনলাইন ইনকাম (Online Income) বর্তমানে বহুল প্রচলিত একটি বিষয় যা ঘরে বসে ইনকাম এবং নিজেই নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির অন্যতম একটি মাধ্যম। হাজার হাজার বেকার যুবক এখন বসে না থেকে এই পথে নেমেছে। যাইহোক, এই ছিলো মূলত আমাদের আজকের আলোচনা।

Post a Comment

0 Comments